Type Here to Get Search Results !

Biofloc Fish Farming PDF Bengali Download / বায়োফ্লক মাছ চাষ সম্পূর্ণ PDF বই ডাউনলোড করুন?

Biofloc Fish Farming PDF Bengali Download / বায়োফ্লক মাছ চাষ সম্পূর্ণ PDF বই ডাউনলোড করুন?

 ভূমিকা

পৃথিবীর জনসংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে সাথে আমাদের প্রােটিন চাহিদাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদেরশরীরের প্রয়ােজনীয় ষাট ভাগ আমিষের যােগান আমরা মাছ থেকে পেয়ে থাকি।বাংলাদেশের ও ভারতের মাছ ও চিংড়ি শিল্পকে টেকসই ও পরিবেশ বান্ধব করলে সম্ভাবনার অপার দিগন্ত খুলে দিতে পারে বায়োফ্লক।বাংলাদেশের ও ভারতের জলবায়ু মাছ চাষের বেশ উপযােগী এবং মাছ চাষে খুব তাড়াতাড়ি অর্থনৈতিক উন্নয়ন সম্ভব।
এখানে মাছ চাষের সহজ এবং আধুনিক বায়োফ্লক পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলােচনা করা হয়েছে। আশা করি মাছ চাষে সহায়ক হবে আমর এই বিস্তর আলোচনা। আমি আমার বাস্তব অভিজ্ঞতা ও ইন্টারনেট থেকে তথ্য সংগ্রহ করে সহজ ভাষায় উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছি। আমি চেষ্টা করেছি সঠিক তথ্য উপস্থাপনের জন্য যাতে যারা বায়ােফ্লকে মাছ চাষে আগ্রহী তাদের কিছুটা হলেও উপকার হয় এবং দেশের সমৃদ্ধি আসে।

Biofloc Technology বাংলাদেশ ও ভারতের জন্য সম্পূর্ন নতুন। এটার আবিষ্কারক হলাে ইসরাইলের Professor Yorum Avnimelech নামের এক বিজ্ঞানী। Biofloc Technology এর মুল মন্ত্র হলাে অল্প পানি বা জলে কিভাবে বেশী মাছ উৎপাদন করা যায়। তিনি সর্ব প্রথম চিংড়ি মাছ এই পদ্ধতিতে উৎপাদন করতে সক্ষম হন।
এটি একটি উদ্ভাবনী এবং সাশ্রয়ী প্রযুক্তি, যাতে মাছের বর্জ্য বা ফিড থেকে উৎপন্ন নাইট্রেট, নাইট্রাইট, অ্যামােনিয়ার মতাে বিষাক্ত পদার্থগুলি দরকারী পণ্য, অর্থাৎ প্রােটিনাসিয়াস ফিডে রূপান্তরিত হতে পারে।বায়ােফ্লোক প্রযুক্তি মাছ চাষের একটি টেকসই এবং পরিবেশগতভাবে বন্ধুত্বপূর্ণ পদ্ধতি যা পানি বা জলের গুনমান এবং ক্ষতিকারক রােগ সৃষ্টিকারী জীবাণু নিয়ন্ত্রণ করে৷

জলীয় খামার ব্যবস্থার জন্য মাইক্রোবায়াল প্রােটিন খাদ্য হিসেবে সরবরাহকরে। বায়ােফ্লোক প্রযুক্তির মূলত বর্জ্য পুষ্টি পুর্নব্যবহারযােগ্য নীতি বিশেষ করে নাইট্রাজেন, মাইক্রোবায়াল জৈব পুঞ্জের মধ্যে খাবারের খরচ কমাতে এবং মাছের দেহের রােগ প্রতিরােধ ক্ষমতা বাড়াতে বায়োফ্লক প্রযুক্তি যুগান্তকারী ভূমিকা পালন করবে।
সর্বাধুনিক এই প্রযুক্তিতে পুকুরের তুলনায় ১০ গুন মাছ বেশি চাষ করা যায়।একটি ছােট হাউজে বা তারপুলিন ট্যাংকে আপনি বায়োফ্লক পদ্ধতিতে সঠিক প্রয়ােগে ২বিঘা পুকুরের সমান মাছ চাষ করতে পারেন। 

রাস সিস্টেমের সঙ্গে বায়োফ্লকের পার্থক্য কি?


রাস সিস্টেমে টাকা খরচ অনেক বেশি এটা হল প্রথম কথা। অনেকের পুকুর নেই, কিন্তু মাছ চাষের শখ বা ইচ্ছা আছে, তারা রাস সিস্টেমে মাছ চাষ করার কথা চিন্তা করতেই পারেন। তবে এক্ষেত্রে যাদের পর্যাপ্ত মানি বা টাকা আছে রাস সিস্টেম তাদের জন্য। কিন্তু বায়োফ্লকে খরচ খুবই কম।

যদি রাস সিস্টেমের সাথে তুলনা করা হয়। শতকরা ৮০ ভাগ খরচ কম লাগে বায়োফ্লকে । রাস সিস্টেমে মাছের খাওয়ার অবশিস্টাংশ একটি পাইপ দিয়ে বের করে প্রথম মেকানিকেল ফিল্টারে নেয়া হয়, এরপর সেখানে থেকে বায়ােফিল্টারে নিয়ে আসা হয়। আবার চাষ ট্যাংকে আনা হয়।


পক্ষান্তরে, বায়ােফ্লক সিস্টেমে কোন ফিল্টারের দরকার হয়না। বায়োফ্লকে সিস্টেমে বায়োফ্লক আসলে একধরণের উন্নতমানের ব্যকটেরিয়া। এটা মাছের উচ্ছিষ্ট দুষিত অংশকে কনভার্ট করে প্রােটিনে রুপান্তারিত করে দেয়। তবে বায়ােফ্লক সিস্টেমে ১৫ দিন পর পর ১০ ভাগ পানি বা জল বের করে দিতে হয়। রাস সিস্টেমে অনেক মেশিনারীজ প্রয়ােজন পড়ে, কিন্তু বায়োেফ্লকে শুধুমাত্র এয়ার পাম্প ব্লাউয়ার চালাতে হয়।

বায়োফ্লকের সুবিধা গুলি কি কি? Biofloc Fish Framig (পর্ব ৪)


১। পানি বা জল পরিবর্তন অনেক কম করতে হয়।

২। ব্যাক্টেরিয়া পানি বা জালের গুণগত মান ভালাে রাখে।

৩। মাছ ফ্লক খায়পানিতে ময়লা আরর্জনা গঠন হওয়া প্রতিরােধ করে এবং পানি বা জলের গন্ধ জনিত সমস্যা কমায়।

৪। ফিড পুনরায় অধিক পরিমানের প্রােটিন খাবারে রুপান্তরিত হয়।

৫।বায়ােফ্লক ব্যাপকভাবে প্রাকৃতিক ভাবে আমােনিয়া কমায় এবং হাইড্রোজেন সালফাইড মাত্রা হ্রাস করে।

৬। মাছের রােগ ব্যাধি নেই বললেই চলে। প্রায় ১% এর কম। মাছের বেঁচে থাকার হার এবং মাছের উৎপাদন ক্ষমতা বাড়ায়।

৭। বায়ােফ্লকের পানি বা জলের প্যারামিটার ঠিক থাকে।

৮। ন্যাচারাল ফুড অধিক পাওয়া যায়, মাছের বৃদ্ধি ভালাে হয়।

৯। বায়ােফ্লকের মূল লক্ষ্য হল অধিক ঘনত্বে ছােট এরিয়াতে মাছ চাষ করা।

বায়োফ্লকে মাছ চাষ পদ্ধতি? বায়োফ্লকে মাছ চাষ দুই পদ্ধতিতে কারা হয়? Biofloc Fish Framing (পর্ব ৫) 

১.ইনডাের ব্রাউন ওয়াটার পদ্ধতি : এই পদ্ধতিতে ঘরের মধ্যে ট্যাংক নির্মাণ করতে হয়। দিনের কিছু সময় সূর্য আলাে পড়ার ব্যবস্থা রাখা থাকে। এখানে ছাউনি হিসাবে পলিথিন বা স্বচ্ছ টিন ব্যবহার করা হয়, যাতে সূর্য আলাে প্রবেশ করে।

২.আউট ডাের বা গ্রিন ওয়াটার পদ্ধতি : পুকুর বা ট্যাংক নির্মাণ করে চাষ করা যায়। এই পদ্ধতিতে সরাসরি সূর্য আলাে পড়ে। এই পানি বা জলের রঙ সবুজ হবে। সব বায়োফ্লকে সিস্টেম এই প্রক্রিয়ায় হয়ে থাকে।এটি কম খরচে করা যায়। 

** সূর্যের আলাে বা লাইট ছাড়া ফ্লগ ভালো হয় না।

বায়োফ্লকে মাছ চাষে ট্যাংক প্রস্তুত কি ভাবে করবেন? Biofloc Fish Framing (পর্ব ৬)

মুলত বায়োফ্লকে মাছ চাষ ট্যাংকেই করা হয়। আবার পুকুর খনন করে সেখানেও করা যায়। ট্যাংক দুই ভাবে তৈরী করা যায়। লােহার মেশ দিয়ে, মানে লােহার বা শক্ত তার জালি (৬মিমি) দিয়ে। অথবা সিমেন্ট দিয়ে। গােলাকৃতও হতে পারে, আবার বর্গাকৃতি বা আয়তাকৃতও হতে পারে। তবে গােলাকৃত টেকসই।

গােলাকৃতি ট্যাংকে মাছের মােভমেন্ট ভাল থাকে। লােহার জালি দিয়ে বানালে চতুর্দিক পুরাে এরিয়া রাবার কার্পেট বা ফ্লোর ম্যাট দিয়ে ঘেরাও করে দিতে হয়। এরপর তারপলিন দিয়ে ঘেরাও করে দিতে হবে যাতে পানি বা জল লিক না করে। আর সিমেন্ট দিয়ে বানালে তারপলিনের প্রয়ােজন পড়ে না। তবে তারপলিন দিয়ে করাটা সবদিক দিয়ে ভাল।

কারণ ইট এবং সিমেন্ট এ এক ধরণের কেমিকেল থাকে, যা মাছের জন্য ক্ষতিকর এবং ফ্লকের জন্যও। ট্যাংকের মাঝখান বরাবর পানি বা জলের একটি নিষ্কাশন পাইপ বসাতে হবে। যাতে করে সময় সময় পানি বা জল বাইরে বের করে দেয়া যায়। ট্যাংকের পরিধি থেকে সেন্টারের দিকে একটু ঢালু রাখতে হবে।তারপুলিন বা সিমেন্ট ট্যাংক যেকোন ট্যাংক আপনাদের খরচ কম হয় আপনারা করতে পারেন।বায়োফ্লকে মাছ চাষে এই ভাবে ট্যাংক প্রস্তুত করলে ভাল হয়। 


বায়োফ্লকে পাম্প এয়ারেশন সিস্টেমঃ

অর্ধেক পরিমান পানি বা জল দিয়ে ট্যাংক পূর্ণ করতে হবে। এরপর এয়ারেশন ছাড়তে হবে। এখানেউল্লেখ্য, এয়ারেশন দিতে হবে পানির বা জলের ৩ স্তরে। উপরের স্তরে, মাঝের স্তরে এবং শেষস্তরে।দ্রবীভূত অক্সিজেন ৫থেকে ৮ পিপিএম বাmg/L.

*১০০০০ লিটার ট্যাংকের জন্য আপনার পাম্প ০.০৩৫MPa এবং ৭৫-৮০ LPM হলে অনেক ভালাে হবে।

বায়োফ্লকে পাম্প এয়ারেশন সিস্টেমে আপনার এয়ার স্টোনগুলাে অবশ্যই ন্যানাে অথবা মাইক্রো হতে হবে।

Do Meter বায়োফ্লকে মাছ চাষে ডিও মিটার কি?

বায়োফ্লকে মাছ চাষে ডিও মিটার এটা দিয়ে পানি বা জলের অক্সিজেন পরিমাপ করা হয়। পানিতে জালে ৫-৮ মি.গ্রা/লিটার হারে দ্রবীভূত অক্সিজেন থাকলে মাছ কাক্ষিত হারে বৃদ্ধি পায়। 

পানিতে বা জলে ২.০ মি.গ্রা/লিটারের কম অক্সিজেন থাকলে রুইজাতীয় মাছ স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে না। অবশ্য মাছ ভেদে অক্সিজেনের মাত্রা পৃথক হতে পারে।


বায়ােকের মাছ চাষে পানি বা জল প্রস্তুতি

পানি বা জলের উৎসঃ গভীর নলকূপ, সমুদ্র, নদী, বড় জলাশয়, লেক, বৃষ্টি ইত্যাদির উৎসের পানি বা জলের গুণ মান ভাল থাকলে ব্যবহার করা যায়। বায়ােফ্লকের জন্য উপযােগী পানি বা জল তেরিঃ প্রথমে ট্যাংক ব্লিচিং পাউডার দিয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে। এর পর নির্বাচিত পানির বা জলের গুণাগুণ পরীক্ষা করে পানি বা জলের প্রবেশ করাতে হবে।

1) ১ম দিন পানির বা জলের ট্যাংক পটাশিয়াম পার্মাঙ্গানেট দিয়ে বা হবে সাবান দিয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে। যাতে খারাপ ব্যাকটেরিয়া দূর হয়ে যায়। পরিষ্কার করার পর ১ দিন শুকিয়ে নিতে হবে। ২) ২য় দিন অর্ধেক পরিমান পানি বা জল দিয়ে ট্যাংক পূর্ণ করতে হবে। এরপর এয়ারেশন ছাড়তে হবে। এখানে উল্লেখ্য, এয়ারেশন দিতে হবে পানির বা জলের ৩ স্তরে। উপরের স্তরে, মাঝের স্তরে এবং শেষস্তরে।। 4) ২ দিন পর মানে ৪র্থ দিন দেখতে হবে টিডিএস এবং পিএইচ। ট্যাংকের পানির বা জলের টিডিএস থাকতে হবে ৯০০-১৫০০, আর পিএইচ থাকতে হবে ৭ এর উপরে। সাধারণত পানির বা জলের টিডিএস থাকে ৫০০ এর মধ্যে আর পিএইচ থাকে ৬ এর নিচে। 5) ৪র্থ দিন দুপুরে যদি পানি  বা জলের টিডিএস ৯০০-১৫০০ এর মধ্যে না হয়, তবে উপরে উল্লেখিত মাত্রার লবন প্রয়ােগ করতে হবে। তারপরও যদি টিডিএস কাঙ্খিত পর্যায়ে না আসে তবে পরিমান মত আরাে লবন প্রয়ােগ করে কাঙ্খিত সীমার মধ্যে নিয়ে আসতে হবে। যদি কোনভাবে টিডিএস ৯০০-১৫০০ এর উপরে চলে যায় তবে নরমাল পানি বা জল মিশায়ে মাত্রা ঠিক করতে হবে। 6) ৪র্থ দিন সন্ধ্যায় পিএইচ যদি ৬ এর নিচে থাকে তবে উপরে উল্লেখিত মাত্রার চুন মিশাতে হবে যেন পিএইচ মাত্রা ৭-৮.৫ এর মধ্যে থাকে। পিএইচ এর কাঙ্খিত মাত্র শুধুমাত্র চুন প্রয়ােগ করেই আনতে হবে। যদি পিএইচ ৮.৫ এর উপরে চলে যায়, তবে ফিটকারী অথবা তেঁতুলের রস দিয়ে কাঙ্খিত সীমার মধ্যে আনতে হবে।

বায়োফ্লকে মাছ চাষে মূল ফ্লক প্রস্তুত কিভাবে করবেন:

প্রথমে ১০০০গ্রাম মােলাসেস বা গুড় ছােট বালতিতে মিশিয়ে দিতে হবে। অল্পক্ষণ পর মিশাতে হবে ১০০০০ লিটার পানির বা জলের  জন্য (পন্ড কেয়ার ৫০ গ্রাম) এবং (একোয়া লাইফ এস ২০০ গ্রাম) প্রােবায়ােটিক।কিংবা আপনারা অন্য যেকোন প্রােবায়ােটিক ব্যাবহার করতে পারেন। এগুলাে মিশাতে হবে সন্ধ্যের পর। তারপর ট্যাংকে ভালােভাবে ছিটিয়ে দিবেন। এভাবে ৭ থেকে ১৫ দিন পর্যন্ত হাই (পাম্প) এয়ারেশনসহ ফেলে রাখতে হবে পানি বা জলের তিনটি স্তরে। পানিতে বা জলে যথাযথ পরিমাণ ফ্লক তৈরি হলেঃ-

১. পানির বা জলের রং সবুজ বা বাদামী/সবুজ দেখায়। 

২. পানিতে বা জলের ক্ষুদ্র ক্ষুদ কণা দেখা যাবে। 

৩. পানির বা জলের অ্যামােনিয়া পরীক্ষা করলে পানি বা জলের অ্যামােনিয়া যেন মুক্ত দেখায়। 

৪. প্রতি লিটার পানিতে বা জলে ০.৩ গ্রাম ফ্লকের ঘনত্ব পাওয়া যাবে। 

৫. ক্ষুদিপানা দেওয়ার পর তাদের বংশ বিস্তার পরিলক্ষিত হয়।

এই ভাবে বায়োফ্লকে মাছ চাষে মূল ফ্লক প্রস্তুত করবেন।

 

বায়োফ্লকে পিএইচ কিঃ
রসায়নে পিএইচ. (pH) হচ্ছে দ্রবীভূত হাইড্রোজেন আয়নের সক্রিয়তার পরিমাপ। মাছ চাষের পানিতে বা জলে পিএইচ এর মাত্রা ৭-৮.৫ এর মধ্যে থাকা বাঞ্চনীয়। পিএইচ মাত্রা যদি ৪.৫ এর নিচে হয় এবং ১০ এর উপরে হয় তবে সব মাছ মারা যাবে। পিএইচ যদি ৬.৫-৮.৫ এর নিচে বা উপরে হয় তবে এক্ষেত্রে মাছ যেকোনভাবে আক্রান্ত হবে।

বায়োফ্লকে ফিশ ফার্মিং এর জন্য পানি বা জলের PH এর মান ৬-৮ এর মধ্যে হলে ভালাে এবং পানিতে বা জলে কোন কিছু প্রয়ােগ করার প্রয়ােজন নেই। তবে PH এর মান ৬ এর কম হলে চুন Cacb3 প্রতি ১ লিটারে ০.০৫গ্রাম/লিটার, অর্থাৎ ১০০০০ লিটারে ৫০০গ্রাম প্রয়ােগ করতে হবে। PH বেশি হলে কোন কিছু প্রয়োেগ করার প্রয়ােজন নাই। এয়ারেশন চালু রাখলে PH এর মান এমনিতেই কমে যাবে।
 
পিএইচ সংখ্যামান দ্বারা প্রকাশ করা হয়। এ পরিমাপক ০ থেকে ১৪ পর্যন্ত বিস্তৃত। পিএইচ-এর মাধ্যমে পানির বা জলের অম্লত্ব ও ক্ষারত্বের পরিমাণ নির্ধারণ করা হয়। এক্ষেত্রে ৭ নিরপেক্ষ মান, ৭ এর উপরে (৭-১৪) ক্ষারীয় মান এবং ৭ এর নিচে (৭-০) অম্লীয় মান নির্দেশ করে। অপেক্ষাকৃত ক্ষারধর্মী পানি বা জল (পিএইচ ৭.৫-৮.৫) মাছ চাষের জন্য ভাল। পিএইচ মাত্রা ৯.৫ এর বেশি হলে পানিতে বা জলে মুক্ত কার্বন ডাই-অক্সাইড থাকতে পারে না। ফলে পানিতে বা জলে উদ্ভিদ-প্ল্যাংটনের উৎপাদন প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। এ অবস্থায় মাছের উৎপাদন দারুণভাবে ব্যাহত হয়। 

পানির বা জলের পিএইচ ১১ ডি, হলে বা ৪ ডি.- এর নিচে নামলে মাছ মারা যেতে পারে। পিএইচ ৭.০-৭.৫ এর মধ্যে থাকলে ফসফরাস সারের কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়। অল্প পানিতে বা জলে উদ্ভিদ-প্ল্যাংটনের জন্য প্রয়ােজনীয় পুষ্টির অভাব দেখা দেয়। পানি বা জলের অম্ল হলে পুকুরে চুন দিতে হয়। পানির বা জলের পিএইচ মাছের খাদ্য চাহিদার ওপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে। অম্ল পানি বা জল মাছ চাষের জন্য ভাল নয়। এ ধরণের পানিতে বা জলে মাছের ক্ষুধা হ্রাস পায় ও খাদ্য চাহিদা কমে যায়। ফলে মাছের বৃদ্ধি কমে যায় ও উৎপাদন হ্রাস পায়। কোন জলাশয়ে পানির বা জলের পিএইচ ৯.০-এর বেশি হলে এবং দীর্ঘদিন স্থায়ী হলে মাছের খাদ্য চাহিদা কমে যায় ও বৃদ্ধি শুন্যের কোঠায় দাঁড়ায়। পিএইচ মাত্রা ৭.০ থেকে ৮.৫ এর মধ্যে থাকলে মাছের খাদ্য চাহিদা বেশি থাকে ও উৎপাদন বেশি হয়। পানির বা জলের পিএইচ মানের দ্রুত উঠানামা মাছ ও চিংড়ি চাষের জন্য ভাল নয়। পানির বা জলের পিএইচ মান কমে গেলে মাছ ও চিংড়ির নিম্নবর্ণিত অবস্থার সৃষ্টি হয়ে থাকে।মাছ ও চিংড়ির প্রজনন ক্ষমতা লােপ পায়। অন্যদিকে পানির বা জলের পিএইচ বেড়ে গেলে মাছ ও চিংড়ির নিম্নবর্ণিত অবস্থার সৃষ্টি হয়ে থাকে।ফুলকা এবং চোখ নষ্ট হয়ে যায়, খাদ্য গ্রহণ বন্ধ হয়ে যায়।
 পানির বা জলের পিএইচ অনুমান কিভাবে করবেন

পানি বা জলে মুখে দিয়ে টক বা লবণাক্ত স্বাদ লাগলে বুঝা যাবে পিএইচ ৭.০- এর কম; • অল্প পানিতে বা জলে লিটমাস কাগজ ভিজালে লাল হবে; • পানির বা জলের পিএইচ ৭.০-এর বেশি হলে পানি মুখে দিলে কষযুক্ত মনে হবে

• ক্ষারীয় পানিতে বা জলে লিটমাস কাগজ ভিজালে লাল হবে। পুকুরে শতাংশ প্রতি ১কেজি হারে চুন প্রয়োেগ করে পিএইচ বাড়ানাে যায়। মাছ চাষে পানির আদর্শ পিএইচ মাত্রা হচ্ছে ৭.৫-৮.৫। পিএইচ মান ৪ এর নিচে গেলে মাছ মারা যাবে। বর্ষাকালে সাধারণতঃ পানির বা জলের পিএইচ যথাযথ মাত্রায় থাকে।
বায়ােফ্লকে পানি বা জলের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ কিভাবে করবেন

বায়ােফ্লকের জন্য তাপমাত্রা একটা বড় ফ্যাক্টর। তাপমাত্রা ২০ এর নিচে নেমে গেলে বায়ােফ্লক তৈরী হবে না।

স্ট্যান্ডার্ড তাপমাত্রা হল ৩০ ডিগ্রী। তাই তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে। বিশেষ করে শীতকালে। তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে মাটির তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য ট্যাংকের মাটি পিভিসি শিট দিয়ে ঢেকে দিতে হবে। অথবা কর্কশীটও (ফোম) ব্যবহার করা যায়। আর উপরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্য শেড দিতে হবে। সাইটের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের জন্যও এই ফোম ব্যবহার করা যায়।

TDS কি?

TDS(Total dissolved solid )হচ্ছে পানির বা জলের পরিচ্ছন্নতার নির্দেশক। প্রতি এক লিটার পানিতে বা জলে কত মিলিগ্রাম দ্রাব্য কঠিন পদার্থ দ্রবিভূত আছে তা TDS (Total dissolved solid )দিয়ে প্রকাশ করা হয়। যত কম টিডিএস, পানি বা জল ততই পরিস্কার। অর্থাৎ পানিতে বা জলে দ্রবীভূত অবস্থায় যেসব কঠিন পদার্থ থাকে তার মাত্রা নির্ধারণে পানির বা জলের টিডিএস পরীক্ষা করা হয়।পানিতে বা জলে সাধারণত দ্রবীভূত অবস্থায় ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, পটাসিয়াম ও সােডিয়ামসহ আরাে কয়েকটি প্রাকৃতিক উপাদান থাকে যাকে টিডিএস বলা হয়। যে পানির জলের টিডিএস মান কম থাকে সে পানি বা জল পান করে কিন্তু আমরা ঐ প্রয়ােজনীয় উপাদান থেকে বঞ্চিত হবাে। টিডিএস মান কমপক্ষে 60-70 থেকে 300mg/Liter থাকা ভালাে। অতি উচ্চমাত্রার টিডিএস ও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।

যাইহােক, বায়ােফ্লকে মাছ চাষের জন্য প্রবায়ােটিক প্রয়ােগের আগে পানির বা জলের TDS ৯০০-১৫০০ নিশ্চিত করতে হবে। TDS বাড়াতে প্রতি লিটারে ১ গ্রাম অর্থাৎ ১০০০০ লিটারে ৩-১০ কেজি রো সল্ট প্রয়ােগ করতে হবে।TDS সঠিক মানে না থাকলে ফ্লক ভালাে তৈরী হবেনা।

 

Post a Comment

0 Comments
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.